ফ্লোরিডা শহরের নর্থ ইস্ট এলাকায় কিছুদিন যাবৎ একটা ব্যাপার নিয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে কানাঘুষো চলছিলো। বেশ কয়েকদিন আগে একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে নির্মমভাবে খুন হন ঐ বাড়ির একজন কেয়ারটেকার। রাতের অন্ধকারে কেও যেন তার ঘাড়ে দুটি দাঁত বসিয়ে শরীরের সব রক্ত চুষে নিয়েছে। ডেডবডি দেখে হতভম্ব হয়েছিলো পুলিশও। এলাকাবাসীদের মধ্যে যারা ডেডবডিটি দেখেছিলেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগই কানাঘুষো করছিলেন "এ কোন মানুষের কাজ না, বরং কোন রক্তখেকো জানোয়ারই এ কাজ করে পালিয়েছে।
ঐ খুনের তদন্তের দায়িত্ব পান একজন মধ্যবয়সী চৌকস অফিসার। নাম ইবানাত জহন।
তদন্তের শুরুতেই তিনি এলাকাবাসীদের সাথে কথা বললেন। যারা প্রত্যক্ষ দেখেছেন তাদের মতামত নিলেন।
শুধু যে এলাকাবাসীর কথাই তা নয়, জহন এর ও কিছুটা সন্দেহ হয়েছে। এলাকার পশ্চিম দিকে বিশাল জঙ্গল। সেই জঙ্গলেই বোধহয় এমন কোন জানোয়ার আছে যে রাতের অন্ধকারে এসে খুন করে শরীরের সব রক্ত সাবাড় করেছে।
তার তত্বাবধানেই তিনটি স্কোয়াড গঠন করা হলো জঙ্গলে ঐ নাম না জানা জানোয়ারটাকে খুজতে। প্রথম দিকে শুরু হয়েছিলো জঙ্গলের নরম মাটিতে অজানা কোন প্রণীর পায়ের ছাপ পাওয়া যায় কিনা। কিন্তু তাতে জহন এর সংগীরা সফল হলোনা। জংগলের মাটিতে অচেনা তো দুরে থাক, কোন চেনা প্রজাতির প্রণীরও পায়ের ছাপ পাওয়া যায়নি।
সারাদিনের পরিশ্রমের পর সন্ধ্যায় বাসাই ফিরলেন জহন। মেয়ে এলিসা ছাড়া আর কেও থাকেনা এ বাসাই। এলিসার বয়স পনেরো ছুই ছুই। সারাদিনের ব্যাস্ততায় মেয়েকে খুব একটা সময় দেয়া হয়না তার।
ডিনারের পর একটি কাঁচের গ্লাসে হুইস্কি ঢাললেন জহন, তাতে কিছু বরফের কিউব নিয়ে গ্লাসটিকে হালকা দোলাতে দোলাতে এলিসাকে ডাকলেন।
এলিসা একটা বই হাতে নিয়ে আসলো বাবার কাছে।
জহন জানেন তার মেয়ে বই পড়তে ভালোবাসে। তাই বইয়টির ব্যাপারে কিছু জিঞ্জেস করলেননা তিনি। বরং তার কপালে আলতো করে হাত বুলিয়ে বললেন, "রাত জেগে বই পড়োনা মা, এখন গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো"।
এলিসা মুচকি হেসে বসলো বাবার কাছে।
ইস্ট এলাকাই খুনের ঘটনা এলিসা আগেই জেনেছে তার বন্ধুর কাছে।
এলিসা তার বাবার কাছে প্রশ্ন করলো, "আচ্ছা বাবা, ঐ প্রাণীটাকে কি তোমরা আদৌ খুজে পাবা?"
জন একটু অবাক হলো মেয়ের এই প্রশ্নে।
সে কি! তুমি কি করে জানলে এ ব্যাপারে?
এলিসা বললো, শুনেছি এক বন্ধুর কাছে। ইস্ট সাইটেই ওদের বাড়ি। লোকটাকে ও দেখেছে। তার শরীরের সব রক্ত নাকি খেয়ে ফেলেছে প্রাণীটা"।
জহন একটু চিন্তিত হয়ে পড়লেন আবারও।
বললেন, "হুম, তাইতো ভাবছি আজ সারাদিন ধরেই। এমন কি জানোয়ার হতে পারে যা দুটো দাঁত দিয়ে শরীরের সব রক্ত চূষে নিলো। নাকি কোথাও ভুল করছি। কোন একটা কিছু মিলছেনা নিশ্চয়ই। ফরেন্সিক রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছেনা"
এলিসা উঠে দাড়ালো, হাই তুলতে তুলতে জহনকে বললো, "রিপোর্ট আসলে আমাই জানিও কিন্তু। আমি ঘুমোতে গেলাম বাবা।"
জহন এলিসার চলে যাওয়া দেখতে লাগলেন। চিন্তার রেশ কমাতে হুইস্কির গ্লাসে শেষ চুমুকটা দিলেন তিনি।
ফরেন্সিক রিপোর্ট আসতে আরো দুদিন বাকি। এরই মাঝে আরেকটি মৃত্যুর খবর নিয়ে বেজে উঠলো জহন এর মুঠোফোন। ওপাশ থেকে তার এসিস্ট্যান্ট বললেন, "জন, এনাদার ভিক্টিম। সেইম প্যাটার্ন। ইউ হ্যাভ টু কাম এসাপ"।
জহন তৎক্ষনাৎ তার গাড়ি বের করে সেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলেন । ইস্ট সাইটের সেই জঙ্গলের পাশেই আরেকটি দুইতলা বাড়ি।
বাড়ির নিচে বেইসমেন্টে বাড়ির মালিক কোন কিছুর শব্দ শুনে তা খুজতে গেছিলেন। বয়স ষাটের কাছাকাছি হবে। একই বয়সী স্ত্রীও সাথেই ছিলেন। কিন্তু চশমাটা সাথে ছিলনা বলে স্পষ্টভাবে কোনকিছু দেখতে পাননি। শুধু বললেন, "আমার হাজবেন্ড এর সাথে যখন বেইসমেন্ট এ গেলাম একটা তীব্র গুমোট গন্ধ নাকে এলো। কিছুক্ষনের জন্য মনে হলো কোন অমঙ্গলকর কিছু আসেপাশে আছে। উনি বেইসমেন্ট এর লাইট জ্বালানোর সংগে সংগে পুরো বাড়িটা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো",,
জহন ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন, "পুরো বাড়িতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে কিভাবে বুঝলেন?"
মহিলাটি বললেন, "বেইসমেন্টের উপরের কাঠের ফাঁকা দিয়ে উপরের ঘরের আলো কিছুটা ঢুকছিলো নিচের দিকে"।
জহন লক্ষ্য করলেন মহিলাটি কথা বলতে গিয়ে কেঁপে উঠছেন বার বার।
তারপর কি হলো? জিজ্ঞেস করলেন জহন এর এসিস্টেন্ট কার্লোস।
বৃদ্ধা মহিলা আবার বলতে শুরু করলেন, "যখন পুরো বেইসমেন্ট অন্ধকার হয়ে গেলো, আমার হাজবেন্ড আমার হাত ধরলেন। কিন্তু আমি আবছা দুটো লাল চোখ তার পেছনে দেখতে পাই। আমার হাজবেন্ড তখনও ব্যাপারটি খেয়াল করেননি বোধহয়। চোখদুটো ভীষন লাল আর জ্বল জ্বল করছিলো।
উনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেই জিনিসটা এসে তাকে ঝাপটে ধরে অদ্ভূত এক রকম শব্দ করতে লাগলো। বাতাসের সাথে তীব্র গন্ধটা নিমিষেই আরও বেড়ে গেলো। শুধু শুনলাম তিনি আমাই দৌড়াতে বললেন। আমি ভয়ে চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে যাই। তারপর আর কিছু মনে নেই। সকালে হুস ফিরতে দেখি ওনার শরীরটা নীথর হয়ে পড়ে আছে মেঝেতে। চোখ দুটো খোলা, যেন আমাকে পালিয়ে যেতে বলছে তখনও"।
বলতে বলতে মহিলাটি মাটিতে বসে কাঁদতে শুরু করলেন। সবাই মুখ কাঁচুমাচু করে একে অপরের দিকে তাকাতে লাগলো। তাদের মুখে ভয় স্পষ্ট।
কিন্তু জহন বিশ্বাস করতে পারছিলেননা এই ঘটনা।
পরপর দুটি একই রকমের মার্ডার। অবিকাল একই। ডেডবডির একইভাবে তাকিয়ে থাকা। ঘাড়ের পেছন দিকে ঠিক একই জায়গাতে দুটো দৈত্যাকার দাঁতের ক্ষত। সাথে মহিলাটির বলা এই ভয়ংকর ঘটনা সবই যেন তালগোল মিলিয়ে ফেলছিলো।
এদিকে পরপর দুটো একই প্যাটার্ন এর মার্ডার হওয়াতে এটি একটি হাই-প্রোফাইল কেইসের জায়গা নিয়ে নেয় রাতারাতি। প্রায় প্রতিটি নিউজ প্রিন্ট গুলোতে একই হেডলাইন পড়তে পড়তে মানুষের কানাঘুষো রীতিমতো আতঙ্কে পরিনত হয়ে উঠলো।
সেই আতঙ্ক এই ছোট ইস্ট সাইটের এলাকা ছাড়িয়ে সমগ্র ফ্লোরিডায় ডানা ঝাপটাতে শুরু করলো দুদিনেই। সাথে তদন্তের চাপ বাড়লো ইবানাথ জহনের উপরও।
আশেপাশের লোকজনদের কাছে জিজ্ঞেস করে জহন জানতে পেরেছিলেন, সেদিন রাতে কোন লোডশেডিং হয়নি। বা কেও কোন শব্দও পায়নি।
তবে কি এই বৃদ্ধা মহিলা মিথ্যে বললো! নাকি কিছু লুকালো। নানা রকম প্রশ্ন বিধতে লাগলো জহনের মস্তীষ্কে। রাতের ঘুম উড়ে গেলো তার। পরদিন সকালে আবার সেই বাড়িতে গেলেন। ক্রাইম সীন ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলেন। কিছু একটা তার চক্ষুগোচর হচ্ছে। কিছু একটা তিনি মিস করছেন নিশ্চয়ই।
খুজতে খুজতে একটা জায়গাই তার চোখ আটকে গেলো। বেইসমেন্টের ঠিক উপরের দিকে ছোট্ট ভেন্টিলেটর আছে। কাচের পাল্লা খুলে দিলে বড়ো সাইজের বিড়াল বা কুকুর অনায়াসে ঢুকতে পারে। তবে মানুষের পক্ষে ঢোকা বা খুন করে পালিয়ে যাওয়া খুব একটা সহজ কাজ হবেনা।
ঐ ভেন্টিলেটরের পেছনের দিকে কিছু অর্কিডের গাছ আছে। সেখানে গেলেন জহন। এই দিক থেকে শেয়াল, কুকুর বা হায়না জাতীয় কিছু ঢুকলে নিশ্চয়ই কোন আলামত পাওয়া যাবে।
আলামত পেলেনও অর্কিডের পাতাই। এক ফোটা রক্ত লেগে আছে। জহন সাবধানে পাতাটি ছিড়ে ফরেন্সিক ব্যাগে ঢোকালেন।
ফোন বেজে উঠল তার। দেখলেন কার্লোসের নাম ভেসে উঠেছে স্ক্রীনে৷ রিসিভ করতেই কার্লোস উত্তেজিত কন্ঠে বললেন, "বস হয়ার আর ইউ? দেয়ার ইজ সামথিং ভেরি রং। ফরেন্সিক রিপোর্ট এসেছে। ঐ বডিতে নাকি বাদুড় জাতীয় কোন কিছুর শ্লেষা পাওয়া গেছে। মোস্ট ইম্পর্টেন্টলি ফরেন্সিক টিম ইজ ভেরি কনফিউস্ড এবাউট দ্যা ডিএনএ"।
জহন বললেন, "হোয়াট ইউ মিন বাই দ্যাট?"
কার্লোস জনকে তৎক্ষনাত ফরেন্সিক অফিসে দেখা করতে বলে ফোন রাখলেন।
জহন সেখানে পৌছে দেখলেন কার্লোস চিন্তুিত হয়ে বসে আছেন। ফরেন্সিক ডাক্তার তার ডেস্কটপে কি যেন ঘাটছেন। জন এর পায়ের শব্দে দুজনেই নড়েচড়ে বসলেন। দুজনের মধ্যেই উত্তেজনা স্পষ্ট।
জহন কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই কার্লোস বললেন, "ইটস এ ভ্যামপায়ার!"।
তৎক্ষনাৎ ফরেন্সিক ডাক্তারও বললেন, " হি ইজ এবস্যুলেটলি রাইট। ইটস এ ভ্যাম্পায়ার।"
জহন এবার রাগান্বিত হয়ে বলে উঠলেন, "হোয়াট ইউ গায়েজ আর ডুইং! এই গাঁজাখুরি গল্প শোনাতে এখানে ডেকেছেন আমাকে?"
তিনি ডাক্তারের দিকে বিরক্তিকর চোখে তাকালেন।
ডাক্তার আর কিছু না বলে, তার দিকে পোস্টমর্টেম রিপোর্টটি বাড়িয়ে দিলেন।
জহন রিপোর্টটি হাতে নিয়ে চোখ বোলাতে লাগলেন। লাল কালি দিয়ে মার্ক করা একটি জায়গাই তার চোখ আটকে গেলো।
"ইটস ইম্পসিবল",, বলে জহন কার্লোসের পাশের একটি চেয়ারে বসে পড়লেন। কার্লোস আর ডাক্তার দুজনেই উৎসাহী চোখে জহনের দিকে তাকিয়ে রইলেন।
জহন বললেন, "কি করে সম্ভব! ক্যান ইউ প্লিজ এক্সপ্লেইন মি! একটা প্রাণীর ডিএনএ একদিক থেকে বাদুড়ের অন্য দিকে মানুষের বৈশিষ্ট্য কি করে বহন করে!"
কার্লোস বলে উঠলো, "ফোনেই তো বললাম ভ্যাম্পায়ার, বিশ্বাস করলেন নাতো!!"।
জন রাগান্বিত চোখে কার্লোসের দিকে তাকালেন।
জহন বললেন, " ভ্যাম্পায়ার এর অস্তীত্ব শুধু ড্রাকুলাতেই আছে, কোন বইয়ে আছে বা কোন নাটকে আছে। বাস্তবতাই ভ্যাম্পায়ার বলতে কিছু নেই। "
ডাক্তারকে উদ্দেশ্য করে জহন বললেন, "প্রয়োজনে আবার পোস্টমর্টেম করেন, নতুন রিপোর্ট তৈরী করেন। নতুন যে বডিটা এসেছে সেটির রিপোর্টও যত দ্রূত সম্ভব আমার চাই।"
ডাক্তার হ্যা সূচক ঘাড় নাড়লেন।
জহন উঠে দাড়ালেন। সঙ্গে উঠলেন কার্লোসও।
সন্ধ্যায় বাসাই ফিরে জহন দেখলেন লিভিংরুমে বসে এলিসা বই পড়ছে। একটু খেয়াল করতেই তিনি বইয়ের মলাট দেখে চিনতে পারলেন।
আগের দিনের সেই বইটিই। তারমানে এলিসা এখনও বইটি শেষ করতে পারেনি।
ভাবতে ভাবতে জন ফ্রেশ হতে গেলেন। লিভিং রুমে ফিরে দেখলেন এলিসা নেই। কয়েকবার নাম ধরে ডাকতেও যখন এলিসার সাড়া পাননি তখন তিনি এলিসার বেডরুমে যান।
রুমের দরজায় দাড়িয়ে দেখলেন মেয়েটা তার বুকের ওপর বইটাকে ঝাপটে ধরে ঘুমিয়ে পড়েছে। তিনি মুচকি হাসলেন৷ আবার নিজের ওপর একটু রাগও হলো জহন এর।
শেষ রাতের দিকে আবারও কার্লোস এর কলে ফোন বেজে উঠলো জহন এর।
রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে কার্লোস বলে উঠলো, "জহন, আরেকটা"।
রিতিমত আধোঘুমেই জহন কার্লোসের শেয়ার করা ঠিকানায় রওনা হলেন।
ঠিক একই প্যাটার্ন। তবে এবার কেউ কিছু দ্যাখেনি।।
জহন কার্লোসকে বডিটা ফরেন্সিকে পাঠানোর ব্যাবস্থা করতে বললেন। তারপর তিনি ক্রাইম সীন টা ঘুরে দেখতে লাগলেন। আসেপাশে বিশাল বড়ো বড়ো গাছপালা আছে। সম্ভবত লোকটি সীগারেট খাওয়ার জন্য ঘরের বাহিরে এসেছিলেন। কারন তার পাশেই আধপোড়া একটা সীগারেটের শেষাংশ দেখতে পেলেন জহন। এর পর তার হাতে সীগারেটের গন্ধও পেলেন তিনি।
এটি আবার খুনিরও হতে পারে। তাই ফরেন্সিক টিম সেটিও সংগ্রহ করে নিলেন।
কার্লোস এবার ভয় পাচ্ছে তা জহন বুঝতে পেরেছেন। কারন তিনি আসার পর থেকে খেয়াল করেছেন কার্লোস একভাবেই ডেডবডিটির দিকে তাকিয়ে ছিলো। তার মানে কি সে সত্যিই ভ্যাম্পায়ারের কথা বিশ্বাস করতে শুরু করেছে!
জহন নিজের কাছেই প্রশ্ন ছুড়লেন।
এদিকে ঐ বৃদ্ধা মহিলার বলা ঘটনাও তো এর সাথে সাদৃশ্য হয়। তাহলে কি সত্যিই ভ্যাম্পায়ার এসেছে এ শহরে! নাকি মানুষের সৃষ্টি কোন গোলকধাঁধা!
পরদিন সন্ধ্যা নাগাদ তিনটি বডির ফরেন্সিক রিপোর্ট একসাথে এলো।
মৃত্যুর কারন একই।খুনের প্যাটার্ন একই। একই ধরনের আলাদা অস্তীত্বের ডিএনএ। কিন্তু একটা জায়গাতে জহনের চোখ আটকালো। প্রথম দুটি বডিতে দাঁতের ক্ষতস্থানের সাইজ এক রকম হলেও তৃতীয় বডিতে এর সাইজ কিছুটা ছোট আকৃতির।
জহন আর সময় নষ্ট না করে কার্লোসকে ফোন করলেন ফরেন্সিকে আসার জন্য।
পৌছে প্রথমেই ডাক্তারকে এই দাঁতের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন।
ফরেন্সিক ডাক্তার বললেন, "আসলে প্রথমে আমিও অবাক হয়েছি। কিন্তু এ থেকে এটাই সুস্পষ্ট যে ভিক্টিম একাধিক সাথে মার্ডারারও।
জহন চিন্তিত হয়ে বললেন, "কোনভাবে কি এমন হতে পারে যে, এক বা একাধিক কোন মানুষ কোন যন্ত্র বা কোনকিছুর মাধ্যমে কৃত্রিম দাঁতের সাহায্যে এই ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। আর অন্য কোন উপায়ে শরীরের রক্ত টেনে নিয়ে যাচ্ছে। হয়ত এর পেছনেও বিশেষ কোন উদ্দেশ্য আছে"
ডাক্তার গম্ভীর হয়ে বললেন, " আমি নিজেও হয়ত এমনটিই ব্যাখ্যা করতাম যদি না ক্ষত স্থানে বাদুড়ের শ্লেষা পাওয়া যেতো। আর যদি না এমন একটি ডিএনএ পাওয়া যেতো যা বাদুড়েরও আবার মানুষেরও। মানুষের পক্ষে এখনব্দি কৃত্রিম ডিএনএ তৈরী করা সম্ভব না। এবং এটাও সম্ভব না যে বাদুড়ের আর মানুষের ডিএনএ আলাদাভাবে সংরক্ষন করে ট্রান্সফরমেশনের মাধ্যমে দুটির মধ্যে মিল ঘটাবে। সুতরাং আমার বক্তব্য অনুযায়ী এটি কোন মানুষের কাজ হতেই পারেনা"।
জহনের কপালে চিন্তার ভাজ সুস্পষ্ট। এদিকে কার্লোসও এই কেইসে আর তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেননা।
হয়তো নিরাপদ মনে করছেন না।